আসসালামু আলাইকুম সুপ্রিম পাঠক। আজ আমাদের আলোচনার বিষয় মুসলিম বিশ্বের অন্যতম পবিত্র স্থান জেরুজালেম শহরে অবস্থিত আল আকসা মসজিদের ইতিহাস সম্পর্কে। ফিলিস্তিন দেশের জেরুজালেম শহরে অবস্থিত পবিত্র মসজিদ আল আকসা কে মুসলিম ধর্মের সাথে ইহুদি ও খ্রিস্টান রাও তাদের পবিত্র ভুমি দাবি করে আসছে।
দুইটি বড় ও ১০ টি গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ টি খ্রীস্টপূর্ব ১০০৪ সালে হযরত সোলাইমান (আ:) পুননির্মাণ করেন। এরপর অনেক বার পবিত্র মসজিদ টি পুননির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে। প্রতিবার পুননির্মাণ ও সংস্কারে অনেক মুল্যবান মার্বেল পাথর ও ধাতু ব্যবহার করা হয়েছে। মুসলিম বিশ্বের অন্যতম এই পবিত্র আল আকসা মসজিদ টি জেরুজালেম শহরে ৩৫ একর জমির উপর নির্মিত। আল আকসা শব্দের অর্থ দুরবর্তী মসজিদ।
আল আকসা মসজিদের গুরুত্ব
মক্কায় অবস্থিত মসজিদুল হারাম ও মনিনায় অবস্থিত মসজিদুল নববীর পর মুসলিম বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তর পবিত্র স্থান জেরুজালেমে অবস্থিত আল আকসা মসজিদ। মুসলিম বিশ্বের প্রথম কিবলা ছিল আল আকসা মসজিদ। যার দিকে মুখ করে হযরত মোহাম্মদ (সা:) ও তার সাহাবিরা ১০ বছর সালাত আদায় করেছেন। এই সম্পর্কে পবিত্র আল কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন “তুমি যেখান থেকে বাহির হওনা কেন মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাকো না কেন ওর দিকে মুখ ফিরাবে।’( সুরা বাকারা, আয়াত-১৫০)। ঐতিহাসিক ভাবেই পবিত্র স্থান জেরুজালেম শহরে অবস্থিত আল আকসা মসজিদ। তারপরেও ইউনেস্কো আল আকসা কে পবিত্র স্থান হিসেবে ঘোষণা দেয়।
ইসরায়েলের দখলে আল আকসা মসজিদ
১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনের জমি অবৈধ ভাবে দখল করে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত হয়। তার ধারাবাহিকতায় ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের মাধ্যমে আল আকসা মসজিদ দখলে নেয় ইহুদি রা। এরপর থেকে আল আকসা মসজিদ টি সম্পুর্ণ বন্ধ থাকে। এমনকি ১৯৬৯ সালে এই পবিত্র মসজিদ টি তে অগ্নিসংযোগও দেয়া হয়। এরপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ ও শর্তসাপেক্ষে মুসলিম দের ইবাদতের অনুমতি দেওয়া হয়। ইহুরি দের বাদি এই পবিত্র ভুমির নিচে তাদের দুইটি পবিত্র মন্দির রয়েছে। এই পবিত্র মসজিদে প্রতিদিন লাখো লাখো ইহুদি আসে। ইহুদিদের কাছে পবিত্র আল আকসা মসজিদ টি টেম্পল মাউন্ট নামে পরিচিত।
ইতিহাসের ঘাত প্রতিঘাবে বহুবার এই পবিত্র স্থান টি ক্ষত বিক্ষত হয়েছে। বর্তমানেও ঝড় বয়ে যাচ্ছে। ইতিহাসের হাজারো সাক্ষী এই পবিত্র মসজিদ আল আকসা।
হামাস কি?
হামাস একটি ফিলিস্তিনি ইসলামি সশস্ত্র গোষ্ঠী যারা ২০০৭ সাল থেকে ইসরায়েল কে হঠানোর মধ্যে দিয়ে গাজা উপত্যকা শাসন করছে। সংগঠন টি ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৮৭ সালে আত্ম প্রকাশ করে। সংগঠন টি সদর দপ্তর ফিলিস্তিনের গাজায়। সংগঠন টি বর্তমান মুখ পাত্র ফাওজি বারহুম। ইউরোপীয়ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল হামাস কে সন্ত্রাসী বাদী সংগঠন বলে ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে তুরস্ক, ইরান, চীন, রাশিয়া ও লেবানন সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দেয়নি।
গত ৮ অক্টোবর, ২০২৩ তারিখে হামাস বাহিনী ইসরায়েলের উপর হালমা চালায়। এই হামলায় কয়েক শত ইসরায়েলি নিহত হন। হামলার ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে, বিশ্লেষক রা বলছে, ইতিহাসে ইসরায়েল এমন ভয়ানক হামলার স্বীকার কখনো হয়নি। এই হামলার ওর ইসরায়েল যুদ্ধ ঘোষণা করে। ধারণা করা হচ্ছে হামাস ইরান ও লেবাননে সংগঠন হিজবুল্লাহ’র সহযোগিতায় এই হামলা পরিচালনা করছে।
হিজবুল্লাহ কি?
হিজবুল্লাহ লেবাননের একটি সংগঠন। এই সংগঠন টি ইসরায়েলে হামলায় পরিচালনায় সহায়তা প্রদান করছে। হিজবুল্লাহ শব্দের অর্থ “আল্লাহর দল”। হিজবুল্লাহ সশস্ত্র সংগঠন টি ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সংগঠনটির সদরদপ্তর লেবাননের বৈরুতে। সংগঠনটির বর্তমান মুখপাত্র হাসান নাসরুল্লাহ।