এশার নামাজ কয় রাকাত ও কি কি

আসসালামু আলাইকুম সুপ্রিম পাঠক।  আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় “এশার নামাজ কয় রাকাত ও কি কি”। প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ।  নামাজ কে বেহেশতের চাবি বলা হয়।  আপনি যদি এশার নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের আর্টিকেল টি পড়তে এসে থাকেন, তাহলে বলব আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন।  আজ আমি আলোচনা করব:- এশার নামাজ কয় রাকাত ও কি কি,এশার নামাজের নিয়ত,এশার নামাজ পড়ার নিয়ম,এশার নামাজের পর আমল ইত্যাদি।

এশার নামাজ কয় রাকাত ও কি কি


এশার নামাজ কয় রাকাত – এশার নামাজের রাকাত সমূহ

হাদিস অনুযায়ী এশার ফরজ নামাজ ৪ রাকাত, যা সকল প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য ফরজ। ফরজ নামাজ আদায় করার আগে ৪ রাকাত সুন্নত ও ফরজ নামাজের পরে ২ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা সহ এশার নামাজ মোট ১০ রাকাত।  

আরো পড়ুন:- জুমার নামাজ মোট কত রাকাত ও কি কি 

আমাদের মধ্যে দ্বিধা রয়েছে যে এশার নামাজ ১৫ রাকাত।  আসলে এশার নামাজ ১০ রাকাত। 

১. ফরজের আগে সুন্নত ৪ রাকাত। 

২.ফরজ নামাজ ৪ রাকাত। 

৩. ফরজ নামাজের পর ২ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।

এখন আসেন, এশার নামাজ কেন ১০ রাকাত বললাম, বিষয় টা ক্লিয়ার করি।এশার নামাজের পর আমরা দুই রাকাত নফল নামাজ ও ৩ রাকাত বেতর নামাজ আদায় করে থাকি। আসলে বেতর নামাজ ও  নফল নামাজের এশার নামাজের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই।  নিচে বিষয়টি আরো ক্লিয়ার ভাবে আলো করা হচ্ছে।  

এশার ৪ রাকাত সুন্নত নামাজ 

ফরজ নামাজের পূর্বে ৪ রাকাত সুন্নত নামাজ রয়েছে।  তবে এই ৪ রাকাত নামাজ ঐচ্ছিক।  আদায় করলে সওয়াব রয়েছে তবে আদায় না করলেও গুন্নাহ হবে না।

এশার ৪ রাকাত ফরজ নামাজ 

এশার ৪ রাকাত ফরজ নামাজ সবার জন্য অবশ্যই পালনীয়।  এশার ৪ রাকাত ফরজ নামাজ ইমামের নেতৃত্বে আদায় করতে হয়,  তবে কোনো সমস্যা থাকলে, একক ভাবে যেকোনো স্থানে আদায় করা যাবে।  

এশার ২ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজ

এশার ফরজ নামাজের পর ২ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজ আদায় করতে হয়।  নবীজি (সা.) তার জীবন দশায় ২ রাকাত সুন্নত নামাজ কখনো ছাড়েনি, তাই আমাদেরও উচিত ২ রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করা। 

২ রাকাত নফল নামাজ

এশার ফরজ নামাজের পর অনেকেই দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে থাকেন, যদিও নফল নামাজের জন্য নিদিষ্ট কোনো সময় উল্লেখ নেই।  মাকরুহ সময় ব্যতীত যেকোনো সময় আপনি নফল নামাজ আদায় করতে পারেন। অনেকেই নফল ২ রাকাত নামাজ কে এশার নামাজের অংশ ভেবে থাকে।  

৩ রাকাত বেতর নামাজ 

এশার নামাজের পর ৩ রাকাত বেতর নামাজ আদায় করে থাকে।  তবে হাদিসে পাওয়া যায়, বেতর নামাজ নিজে একটি নামাজ, এর সাথে এশার নামাজের কোনো সম্পর্ক নেই। 

বেতর নামাজ পড়ার নিয়ম হচ্ছে রাতের শেষ প্রহরে তাহাজ্জুদ নামাজের পর।  যারা রাতে উঠতে পারবেন না, বা অন্য কোনো সমস্যা আছে, তারা এশার নামাজের পর এই নামাজ আদায় করতে পারবেন।  

হাদিস অনুযায়ী ১ রাকাত, ৩ রাকাত,  ৫ রাকাত বা ৭ রাকাত বেতর নামাজ আদায় করার বিধান আছে।  আলোচনা থেকে আশা করি বুঝতে পেরেছেন বেতর নামাজ ্ও এশার নামাজের অংশ নয়। 

এশার নামাজ সম্পর্কে হাদিস 

হাদিসে এসেছে  “যে ব্যক্তি এশার ও ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে পড়ল,  সে যেন সারা রাত দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ল” (মুসলিম হাদিস ৬৫৬)

এশার নামাজের নিয়ত

এশার ৪ রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ত বাংলায় উচ্চারণ দেওয়া হলো।  

“নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা আরবাআ রাকয়াতি এশায়ি ফারজুল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।” 

বাংলায় নিয়ত: আল্লাহর উদ্দেশ্যে এশার ৪ রাকাত ফরজ নামাজ কিবলামুখী হয়ে এই ইমামের নেতৃত্বে আদায় করিবার নিয়ত করিলাম, আল্লাহু আকবর। 

আমরা যারা আরবি পড়তে জানি না, বা বলতে পারি না তারা অবশ্যই বাংলায় নিয়ত করিব।  

এশার নামাজের পর আমল

আমাদের দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী।  পরকালের জীবন স্থায়ী।  আল্লাহ তায়ালা আমাদের দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন তার এবাদত করার জন্য।  দুনিয়ার কোনো কিছুই মৃত্যুর পর আমাদের সাথে কবরে যাবে না।  আমাদের কবরের জীবনের জন্য একমাত্র পুজি আমাদের আমল। অন্যান্য আমলের চেয়ে গভীর রাতের আমল আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়।  তাই আমাদের উচিত গভীর রাতে আল্লাহর এবাদত করা।  

এশার নামাজের পর অনেক ইবাদত আছে।  তবে এশার নামাজের পর আয়তাল কুরসি পাঠ করা উত্তম।  আয়তাল কুরসি পাঠের অনেক ফজিলত রয়েছে।  এছাড়াও এশার নামাজের পর সুরা মুলক পাঠ করা উত্তম।  প্রিয় নবী করিব (সা.) বলেছেন প্রতি রাতে এশার নামাজের পর সুরা মুলক পাঠ না করে কেউ যেন না ঘুমায়।  তাই আমরা প্রতিরাতে এশার নামাজের পর সুরা মুলক পাঠ করার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ।  

আরো পড়ুন:- জুমার নামাজের নিয়ত

Leave a Comment