সুচনা
আসসালামু আলাইকুম সুপ্রিম পাঠক। আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় “অজু”। নামাজের প্রথম শর্ত হলো অজু। অজু নামাজের চাবি। অজু ছাড়া নামাজ আদায় হয় না। অজু করার পর অজু ভেঙ্গ হলে, নতুন করে অজু করতে হয়। অজুর গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি। আজ আলোচনায় থাকছে:- অজু করার নিয়ম, অজুর ফরজ কয়টি,অজু ভঙ্গের কারণ ইত্যাদি।
অজু করার নিয়ম
অজু করার নিয়ম নিচে বর্ণনা করা হলো, আশা করি, আমাদের পাঠক উপকৃত হবেন।
- মনে মনে নিয়ত করা।
- বিসমিল্লাহ পড়া।
- দুই হাতের কব্জি পযন্ত তিনবার ধৌত করা।
- মেসওয়ার্ক করা।
- তিনবার কুলি করা৷
- তিনবার নাকে পানি দেওয়া।
- সমস্ত মুখমন্ডল তিনবার ধৌত করা।
- আঙ্গুলের মাথা থেকে ডান হাতের কনুই পযন্ত তিনবার ধৌত করা এবং একই ভাবে বাম হাত তিনবার ধৌত করা।
- মাথা মাসেহ্ করা।
- তর্জনী আঙুলি দিয়ে কানের ভিতরের অংশ ১ বার মাসেহ করা এবং বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে কানের বাইরের অংশ একবার মাসেহ করা।
- ডান পায়ের টাখনু পযন্ত তিনবার ধৌত করা, একই ভাবে বাম পায়ের টাখকু পযন্ত তিনবার ধৌত করা।
- অজুর দোয়া পড়া।
অযু কত প্রকার ও কি কি?
অজু তিন প্রকার। নিচে বর্ণনা করা হলো।
- ফরজ: -নামাজের জন্য অজু করা ফরজ
- ওয়াজিব:- কাবা শরিফ তাওয়াফের জন্য অজু করা ওয়াজিব।
- মোস্তাহাব:-গোসল ও ঘুমানোর আগে অজু করা মোস্তাহাব।
ওজুর ফরজ কয়টি
অজুর ফরজ ৪টি।
- সমস্ত মুখমন্ডল তিনবার ধৌত করা।
- দুই হাতের কনুই পযন্ত তিনবার ধৌত করা।
- মাথা মাসেহ করা (একবার)।
- দুই পায়ের টাখনু পযন্ত তিনবার ধৌত করা।
অজু ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কি কি
অজু ভঙ্গের কারণ মৌলিক ভাবে ৭ টি।
- পেশাব ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া।
- শরীরের কোনো অংশ থেকে রক্ত, পুজ বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া।
- মুখ ভরে বমি হওয়া।
- থুথুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া।
- চিৎ বা কাত হয়ে হেলান দিয়ে ঘুয়ে পড়া।
- পাগল, মাতাল বা অতেচন হওয়া।
- নামাজের মধ্যে উচ্চ স্বরে হাসি দিলে।
অজু করার দোয়া
অজু করার সময় এই দোয়া পড়তে হয়।
অজুর দোয়ার বাংলা উচ্চারণ:- “আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি, ওয়া ওয়াসসিলি ফি দারি, ওয়া বারিক লি ফি রিযক্বি।”
বাংলা অর্থ :- “হে আল্লাহ! আমার গোনাহ মাফ করে দাও। আমার জন্য আমার বাসস্থান প্রশস্ত করে দাও। এবং আমার রিযিক্বে বরকত দিয়ে দাও।”
বাংলা অর্থ :- “হে আল্লাহ! আমার গোনাহ মাফ করে দাও। আমার জন্য আমার বাসস্থান প্রশস্ত করে দাও। এবং আমার রিযিক্বে বরকত দিয়ে দাও।”
অজু করা শেষ হলে, আকাশের দিকে তাকিয়ে এই দোয়া পড়তে হয়।
অজুর দোয়ার বাংলা উচ্চারণ :-” আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।” বাংলা অর্থ :- “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই। তিনি এক, তাঁর কোন শরিক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসুল।”[মুসলিম:-মিশকাত]
উপসংহার
অজু ছাড়া নামাজ আদায় হয় না। তাই আমাদের অজু সম্পর্কে সব সময় শর্তক থাকতে হবে। অজুর দোয়া, অজুর ফরজ, অজু ভঙ্গের কারণ সম্পকে জ্ঞান থাকতে হবে। নামাজের মধ্যেও অজু ভেঙ্গে গেলে, নামাজ বাদ দিয়ে গিয়ে অজু করে আসি, নামাজ আদায় করতে হবে।